আম্মার সাথে ঈদের দিনেও অভিমান ! রাতেই বলে দিয়েছিলাম, আম্মা কালকে তো পোলাও করবে , আমার জন্য ভাত রাঁধতে হবে । আমি পোলাও খাবো না । সকালে দেখি ভাতের হাড়ি শূন্য-পোলাওয়ের সুবাস ঘরে । আমার মন খারাপ-আমি বললাম ঠিকাছে খাবোই না
রমজানে বাড়িতে থাকলে ইফতারীতে ভাত খেতে আকুপাকু করে মন আব্বা হয়তো জিলাপী টিলাপী -আরো কি কি কিনে আনেন , ছুয়েও দেখতে ইচ্ছা করে না । প্লেট উঁচু করে ভাত নিয়ে গোমরা মুখে বসে থাকি
সত্যিকারের এক ভেতো বাঙ্গালী আমি ! কোন এক পাঠ্য বইয়ের কবিতার একটা লাইন মাথায় ঘুরপাক খায় তুই যে আমার শানকি ভরা ফুলের মত ভাত - ভাষার সাথে তুলনা করেছিলেন কবি, আমি ভাত খাওয়ার সময় কেন যেন এটা ভাবতে খুব ভালো লাগে, ভাত নয়-ধবধবে সাদা কোন সুরভিত ফুল খাচ্ছি । বিশ্বাস করুন, একেবারে সত্যি কথা বলছি ...
ভাতের অবশ্য কয়েকটা রকমফের আছে, আমার ! সবচেয়ে ভালো লাগে পান্তা ভাত ! সাথে যদি থাকে মুচমুচে একটা ডিমভাজা তাহলে বেষ্ট না থাকলে দু-তিনটা পোড়া-শুকনো মরিচ এবঙ অবশ্যই অনেকখানি লবন । পৃথিবীর সেরা খাদ্য
ইউনি বন্ধকালীন হলে থাকলে মাঝে মধ্যে রুমে রান্না করি মজা করে। এসময়ের মুল আকর্ষণ হয় মাড়-ভেজা ধোয়া ওঠা খুব নরম গলানো গরম ভাত । মাখালে ময়দার মত মিশে যাওয়া ভাত-উফ কি মজা !!
আরেকটা আছে । আমি বলতাম ভাত ভুনা । এস.এস.সি. পরীক্ষার সময় প্রথমে আব্বার কাছ থেকে শিখেছি । রাত জেগে পড়তাম । একদিন রাত দুটার দিকে আব্বা কেরোসিন কুকারে জিনিসটা বানালেন । সত্যি, সে এক খাবার বটে । এখনও বাড়িতে গেলে এটা বানানো চাই ই, নিজেই বানাই । বড় একটা পেয়াজ কুচি, ৬-৭ টা কাচামরিচ সেটাও একেবারে কুচি করে কাটা , হলুদ, সয়াবিন তেল আর দুএকটা এলাচ । মশলাগুলো গরম তেলে একটু সিদ্ধ হয়ে এলেই প্লেট মেপে ভাত ছেড়ে দেই । তারপর চামচ দিয়ে অনবরত নাড়ানো । একটা সময় ভাত কড়াইয়ের গায়ে লেগে লেগে গেলে স্বাদের পূর্ণতা
রুমে রান্না করার জন্য লাষ্ট চাল কিনেছি ৪৫ টাকা কেজিতে আমার শখের ভাত খাওয়া প্রজেক্ট বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে বলে মনে হচ্ছে আমার ফুলের মত ভাত , আহা... বাড়ি যাবো খুব শিঘ্রি...ভাত খেতে বাড়ি যাবো ...
No comments:
Post a Comment