22 July 2008

টুপিওয়ালারা শুনুন, "তোমরা সংঘবদ্ধভাবে আল্লাহর রজ্জুকে ধারন কর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়োনা"

সিরিয়া সীমান্তের এক গ্রামে মাইন বিষ্ফোরণে দুটি পা উড়ে গেলো বালিকা জোহায়রার। কোনভাবে উত্তর নেপালের এক মুসলমান ব্যবসায়ী এখবর জানতে পেরে হৃদয়ে অনুভব করলেন তীব্র ব্যাথা । কিচ্ছু করার নেই ... হাজার মাইল দুর থেকে শুধুমাত্র কেপে কেপে উঠলেন তীব্র প্রতিশোধস্পৃহায় ।

আমাদের চেয়ে বেশি ঐক্যসূত্র আর কার আছে? হাজারো শিরা উপশিরার মত বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থেকেও আমাদের পক্ষেই সম্ভব পাশাপাশি দুটি আংগুলের মত একই বিন্দুতে মিলে থাকা । কেবলমাত্র আমাদের পক্ষেই সম্ভব ফিলীস্তীনের শহীদ মুজাহিদটির জন্য ভারতবর্ষের কোন এক অজানা গন্ডগ্রামে বসে দুহাত তুলে চোখ ভাসানো আন্তরিক আকুতিতে ।

এ বিশ্ব আমাদের । আমরা এখানে অনাহুত নই । এ বিশ্ব এবং আমাদের প্রত্যেকের স্রষ্টা এক ও একমাত্র একজনই । আমাদের বিশ্বাস এবং আমাদের চুড়ান্ত গন্তব্যের এই সীমাহীন ঐক্য থাকার পরেও আমরা কেন নিজেদেরকে দুর্বল ভাবি । আমাদের কালেমা এক- আমাদের অনুসরনযোগ্য নেতাও মাত্র একজনই ।

আহা...
এতটা বোকামীও কেউ করতে পারে ! কতটা অজ্ঞানতার অন্ধকারে ডুবে গেলে কেউ পারে দিনের পর দিন একই শত্রুর থেকে আঘাত পেয়ে তাকে পাল্টা আঘাত করার দরজা বন্ধ করে দিয়ে, নিজের ভাইকে আঘাত করতে ! তুমি শিয়া-তুমি সুন্নী-তুমি অমুক-কত অদ্ভুত আমাদের বিভক্তির সীমারেখাগুলি !! আমরা কেন একবার ভাবিনা আমাদের সকলের সেই একমাত্র চুড়ান্ত উচ্চারণ-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ.....মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ...

এতটা অন্ধ হয়ে গেছি আমরা... যতটুকু বড় করা যায়, চোখকে ততটুকু প্রসারিত করে দেখছি , এক আল্লাহ জিন্দাবাদ এর অবিশ্বাসীরা আক্রমন শানানোর জন্য একবারও ভাবছে না কোনটা শিয়া , কোনটা সুন্নী ... কে ইরাকে থাকে আর কে বাংলাদেশের বাসিন্দা... যাদেরকেই ভাবছে কালেমায়ে শাহাদাতের অনুসারী না হোক কেবল উচ্চারনকারী ; ওদের অস্ত্রের নল তাদের দিকেই তাক হচ্ছে নির্দিধায় । উপলদ্ধিতে একটুও আলোড়ন তুলছে না আমাদের । আপসোস আমাদের জন্য ।


খন্দক যুদ্ধের অবস্থাটা ছিলো , সামনে পেছনে , ডানে বায়ে উপর নীচএ... ১০ দিক থেকে মুসলিম বাহিনীকে বিপদ ঘিরে ফেলেছিল । সে যুদ্ধে মাটির দেয়ালের প্রতিরোধ বিজয়ী করেছিল মুসলিম বাহিনীকে । আজ আক্রমনের মাত্রা এতটুকু বাড়েনি বা কমেনি । কেবল মাত্র ধরন পরিবর্তিত হয়ে গেছে । আজকেও অসংখ্য দিক দিয়ে এ জাতিকে আক্রমন করা হচ্ছে । আমরা আক্রান্ত হচ্ছি আমাদের সাংস্কৃতিক মুল্যবোধে, আমরা আক্রান্ত হচ্ছি আমাদের পারিবারিক বন্ধনব্যবস্থায় । আমাদের বিশ্বাসের ভিতকে নাড়িয়ে দিতে আক্রমন শানানো হচ্ছে আমাদের প্রিয় নবীর প্রতি । মিডিয়ার দৈত্যের পায়ের চাপে আমাদের নাভিশ্বাস উঠে গেছে । ... আহা .. আমাদের আলেমরা বিতর্ক তুলছে আরামদায়ক আলস্যে... দাড়ির দৈর্ঘ্য কতটুকু হওয়া দরকার , তারাবীর নামাজ ২০ রাকাত নাকি ৮ রাকায়াত... শবে বরাতের রাতে নামাজ পড়া যায়েজ না নাজায়েজ...

আমরা নিজেদেরকে বিভক্ত করে ফেলছি.. ওরাও যতটা সম্ভব উষ্কানী দিচ্ছে সে বিভক্তির দাবানলে..কিন্তু বিশ্বাস করুন তাদের চোখে আমরা এতটুকু বিভক্ত নই । তাওহীদের অনুসারীরা ওদের চোখে ঠিকই একটামাত্র দেয়ালের ভিন্ন ভিন্ন ইট । ওদের উদ্দেশ্যে কোনরকম ভিন্নতা নেই কারো প্রতি । ভৌগোলিক সীমারেখা আমরা টেনে দেই..ওরা টানেনা...ইরাকী মুসলমান আর কাশ্মীরের মুসলমান যেমন একই ব্যবহার পায় বাঙালী মুসলমান তার থেকে ভিন্ন ব্যবহার পাবে, এটা কখনও সম্ভব নয় । সুন্নী মুসলমান তাদের ধ্বংসের টার্গেট-শিয়া মুসলমান সে টার্গেটের বাইরে নয় ....


ভেঙ্গে ফেলো সকল বিভেদ-দেয়ালগুলি
একত্র হও ,এক কাতারে, আজ সবে...
দেখবে; কোথায় পালিয়ে গেছে শেয়ালগুলি,
এই ধরনী আবার খোদার রাজ হবে...

No comments:

Post a Comment